প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১০/০৭/২০২১

গত ০৮ জুলাই, ২০২১ বৃহষ্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজে লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত ও আরো প্রায় ৩০ জনের মতো শ্রমিক আহতের ঘটনা ঘটে। হতাহত শ্রমিকদের বেশীরভাগই নারী ও শিশু/কিশোর। ভয়াবহ এ ঘটনায় শ্রমিক হতাহতের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কর্মজীবী নারী। একই সঙ্গে হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন কবীর, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখা, অগ্নিকান্ডের সময় দরজা বন্ধ রেখে ও উদ্ধারকারীদের প্রবেশে বাধা দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ এই শ্রমিকদের হত্যা করেছে। এমনকি কারখানাটিতে শ্রম আইন ভঙ্গ করে শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর তথ্যও মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টস, টেম্পাকোসহ একের পর এক কারখানা দূর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ঘটনারই সুষ্ঠ বিচার হয়নি। কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণেই দেশের শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বলে তারা মনে করেন।

কর্মজীবী নারী’র নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন ভঙ্গ করে শিশু শ্রমিক নিয়োগ, কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব, দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণে অবহেলা, অপ্রতুল নিরাপত্তা ও বহির্গমন ব্যবস্থা বজায় রেখে শ্রমিকদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়াকে মালিকের অপরাধ বলে মনে করেন। তারা বলেন, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা প্রদান ও শ্রম আইন বাস্তাবায়নের দায়িত্ব শ্রম মন্ত্রণালয়ের। একই সঙ্গে কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখা হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। কিন্তু ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ড ও শ্রমিক হত্যার ঘটনায় প্রতীয়মান হয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হয়েছেন। সরকার এই হতাহতের দায় এড়াতে পারে না এবং তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে দাবি করেছে কর্মজীবী নারী। একই সঙ্গে পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় নিহত শ্রমিকদের সনাক্তকরণ ও প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিতকরণ, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত শ্রমিকদের তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং শিশু শ্রম বন্ধসহ এ ধরণের ঘটনা বন্ধে ও শ্রমিকদের জন্য সুষ্ঠু ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের মালিকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নেতৃবৃন্দ।

বার্তা প্রেরক
ইসরাত জাহান পপি

Pin It on Pinterest