নিজস্ব প্রতিবেদক ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ও বাস্তাবায়নসহ সরকারের কাছে তিন দফা সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জেন্ডার প্ল্যাটফর্মের অন্য দাবিগুলো হলোÑ আইন প্রণয়নের পূর্ব পর্যন্ত হাইকোর্টের নীতিমালা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ছাড়া সরকার কর্তৃক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা দেন : জেন্ডার প্ল্যাটফর্মের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক আইনুন নাহার। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল জেড এম কামরুল আনাম, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আকতার, কর্মজীবী নারীর পরিচালক সানজিদা সুলতানা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ এবং ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান সময়ে কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির মাত্রা, এর সংখ্যা ও বীভৎসতা দিনে দিনে বেড়েছে, যা এখন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ১১টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, বাংলাদেশ শ্রম আইন থাকা সত্ত্বেও কেন কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রয়োজন সে বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট তার রায়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। রায়ে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে কোর্টের এই আদেশ ও নির্দেশনাগুলো পার্লামেন্ট কর্তৃক এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ও কার্যকর আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুসৃত ও পরিপালিত হবে। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়ারানি প্রতিরোধে কোনো আইন পাশ হয়নি। এমনকি হাইকোর্ট যে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছিল সেগুলোও কোনো প্রতিষ্ঠানে বাস্তাবায়ন করা হয়নি।

এ সময় কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের পর গত ২৮ এপ্রিল জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম কর্তৃক হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কতকগুলো কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি হয়েছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়, যা এখনো শুনানির পর্যায়ে আছে।

আমাদের দৃঢ় বিশ^াস, দ্রুত সময়ের মধ্যে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১৯ পাশ ও আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভয়াবহতার চিত্র পাল্টাতে ও সর্ব ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে অত্যন্ত কার্যকর হবে।

Link: Daily Nayadiganta | PDF

Pin It on Pinterest