প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ০৫/১২/২০২২
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়ন করো ও আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করো
-কর্মজীবী নারী
কর্মজীবী নারী’র ‘একতায় মর্যাদা’ প্রকল্পের অধীনে আজ ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ সোমবার বিকল ০৪ টায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও টেরে ডেস হোম্স ইতালিয়া-এর সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে মিরপুর-১৩ এলাকায় মানববন্ধন এর আয়োজন করে।
কর্মজীবী নারী’র সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কর্মজীবী নারী’র সমন্বয়ক হাছিনা আক্তার, প্রকল্প সমন্বয়ক শাহিদা আক্তার, প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হুরমত আলী, জাতীয় শ্রমিক জোট- বাংলাদেশ এর ঢাকা মহানগর এর যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহানাজ প্রমুখ। কর্মসূচি পরিচালনা করেন প্রকল্প কর্মকর্তা আল- জাহিদ, প্রকল্প সমন্বয়ক কাজী গুলশান আরা এবং রাবিতা ইসলাম।
সভাপতির বক্তরে্য উম্মে হাসান ঝলমল বলেন- প্রতিটি অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, না হলে নারী নির্যাতন রোধ করা সম্ভব হবে না। আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের সাথে নারী নির্যাতনের চিত্রটি একেবারেই মেলানো যাই না, এখনও কেন নির্যাতন হবে? তাই যেখানেই নির্যাতন হবে সেখানেই আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রে আমাদের বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন পুরুষদের নিকট থেকে।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে বক্তারা বলেন, নারীরা আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে আপন মহিমায় জায়গা করে নিচ্ছে। সাফ গেমসে আমাদের নারীদের যে অভিনব সফলতা সেটার মাধ্যমেই আমারা প্রমাণ করতে পেরেছি যে, সুযোগ পেলে নারীরাও এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে নারীরা এগিয়ে আসছে, সফলও হচ্ছে তবে নারীর জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ পরিবেশের অভাব নারীর এই অগ্রগতিকে বাঁধাগ্রস্ত করছে। কন্যা শিশু থেকে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত সকলেই বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি বখাটে ছেলেদের উত্যক্ততার কারনে আগামীর ভবিষ্যৎ মেয়ে শিশুদের স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার বেড়ে যাচ্ছে। এ কারনে বিভিন্ন পরিবারে বাল্য বিয়ের প্রবণতাও বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রে শ্রমজীবী কর্মজীবী নারীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ কর্মপরিবেশের ব্যবস্থা না থাকায় যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে নারীরা।
বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী সংবিধানের আলোকে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি হয়রানি ও নির্যাতন নিরসনে প্রচলিত আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও দুর্বল আইন সংশোধনের জন্য এই মানববন্ধন থেকে আহবান জানান বক্তারা।
এছাড়া নারীর জন্য নির্যাতনমুক্ত, নিরাপদ পরিবার, কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা এবং সেই সাথে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়ন ও আইএলও কনভেনশন- ১৯০ অনুসমর্থন করার জোর দাবী জানান আয়োজনে উপস্থিত বক্তারা ।
এই কর্মসূচী থেকে কর্মজীবী নারী’র দাবীসমূহ:
১. নারীর জন্য নির্যাতনমুক্ত ও নিরাপদ, পরিবার এবং কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলতে হবে;
২. নারী-পুরুষ সমান কাজে সমান মজুরি নিশ্চিত করতে হবে;
৩. নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে হবে;
৪. বৈষম্যহীনভাবে সকলক্ষেত্রে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত ও নারীবান্ধব, কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে;
৫. কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়ন করতে হবে, আইএলও কনভেনশন- ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে;
৬. গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে;
৭. গৃহশ্রমিকের অধিকার রক্ষায় গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা ২০১৫ বাস্তবায়ন করতে হবে;
৮. সকল কর্মজীবী শ্রমজীবী নারীদের জন্য, ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. নারী নির্যাতনকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
১০. নির্যাতিতদের সঠিক বিচার পেতে আইনী প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
১১. নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর করতে হবে
১২. নারী ও শিশুর উপর সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার করতে প্রচলিত দুর্বল বা ত্রুটিপূর্ণ আইনের সংস্কার এবং যুগোপযোগী নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন (PDF)
বার্তা প্রেরক,
রাবিতা ইসলাম,
প্রকল্প সমন্বয়ক, কর্মজীবী নারী
যোগাযোগ: (০১৯৩৭-০৩৮৭০০)