প্রেসবিজ্ঞপ্তি: ফেনীতে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার গৃহবধু খালেদা হোসেন অমিসহ নির্যাতিত সকল নারীর ন্যায়বিচারের দাবিতে কর্মজীবী নারী’র বিবৃতি

প্রেসবিজ্ঞপ্তি
২৮ আগষ্ট, ২০২১

ফেনীতে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার গৃহবধু খালেদা হোসেন অমিসহ নির্যাতিত সকল নারীর ন্যায়বিচারের দাবিতে কর্মজীবী নারী’র বিবৃতি:

পরশুরামের সাতকুচিয়ার পূর্ব দরবারপুর গ্রামে যৌতুকের জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকেদের দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ফুলগাজীর মেয়ে খালেদা হোসেন অমি। স্বামী আব্দুল হালিম লিখনের প্রবাসে থাকার সুযোগে শাশুড়ি খাইরুননেসা, ননদ হাসিনা বেগম, হাসিনার স্বামী আবুল কাশেমসহ পরিবারের সকলে প্রায় সময় খালেদা হোসেন অমির উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। পারিবারিক কলহের জের ধরে বিভিন্ন সময় তার উপর পাশবিক নির্যাতন করা হতো। সম্প্রতি তাকে বিষধর সাপ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসার নাম করে চোখ মুখ বেঁধে ওঝা দিয়ে শরীরে সাপ ছেড়ে দেয়া হয়। ভয়াবহ মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে যখন সে তার মায়ের বাড়িতে অবস্থান করছিল তখন শ্বশুর বাড়ি থেকে ননদ ও ননদের স্বামীসহ কয়েকজন তাদের বাড়িতে এসে পরিবারের অন্য সদ্স্যদের সাথে বাক-বিতণ্ডা ও মারামারি করে এবং অসুস্থ অমিকে বিছানায় থাকা অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ফুলগাজী থানায় মামলা করেছেন খালেদা হোসেন অমি। মামলার আসামী ননদ হাসিনা বেগম ও তার স্বামী আবুল কাশেম বর্তমানে জেল হাজতে আছেন। নির্যাতনের শিকার খালেদা হাসান অমি বর্তমানে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। প্রতিহিংসার জের ধরে বর্তমানে অমির চরিত্র নিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, সাধারণ সম্পাদিকা শারমিন কবীর ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, এ সমাজে নারীরা প্রচলিত ধ্যান-ধারণার কাছে কতটা অসহায়। এ সমাজে কন্য শিশু এখোনো অবাঞ্চিত। তাকে সহজে গ্রহন করতে এ সমাজ এখোনো অভ্য¯ত হয়ে ওঠেনি। নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে বা ভাবতে কষ্ট হয়। খালেদা আক্তার অমির ছেলে সন্তান না হওয়ায় কারণেও তাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। নির্যাতনের শিকার খালেদা আক্তার অমি কথাও বলতে পারছে না। তাঁরা আরও বলেন, বিশ্ব যখন করোনা মহামারীর সংকটে নিপতিত তখন দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের এসব ভয়াবহ ঘটনা সকলকে উদ্বিগ্ন করছে। সমাজে এখনো নারীরা যৌতুকের জন্য পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আদিম উপায়ে নারীকে নির্যাতন করা হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ খালেদা হোসেন অমিসহ সকল নারীর উপর সংঘটিত পারিবারিক ও সামাজিক নির্যাতনের ন্যায়বিচারের দাবি করে এবং নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধে সবাইকে এক সাথে কাজ করার আহবান জানান।

বার্তা প্রেরক
কাজী গুলশান আরা দীপা
প্রশিক্ষক
কর্মজীবী নারী
যোগাযোগ: ০১৭১৬৮৬৪৪৭২

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর। আসুন নারী’র উপর সকল প্রকার নিপীড়ন-সহিংসতা প্রতিরোধে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বত্র সম্মিলিত আন্দোলন গড়ে তুলি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ২৪/০৮/২০২১

ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর
আসুন নারী’র উপর সকল প্রকার নিপীড়ন-সহিংসতা প্রতিরোধে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বত্র সম্মিলিত আন্দোলন গড়ে তুলি

২৪ আগস্ট ২০১৯ গৃহশ্রমিক ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর। ইয়াসমিনকে স্মরণ করে এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ভয়াবহতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন কবীর, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নারী’র প্রতি নিপীড়ন-সহিংসতা প্রতিরোধে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর পরও একই ঘটনা এখনও চলছে। আজকের দিনেও দুই থেকে সাত বছরের শিশু ধর্ষিত হচ্ছে। এরা কেমন পুরুষ! এদের বিরুদ্ধে গণজাগড়ন গড়ে তুলতে হবে। সেই সাথে নির্যাতনের ঘটনার দ্রুত বিচার নিষপত্তির জন্য নতুন আইন করতে হবে। আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান আপনারা কোন অপরাধীর পক্ষে দাঁড়াবেন না। সেইসাথে এমন একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যেন শিশুরা একা স্কুলে যেতে পারে, খেলতে পারে, একা নারীরা চলাফেরা করতে পারে। রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ইয়াসমিনের হত্যাকারীদের ফাঁসি আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। কিন্তু ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর পেরুলেও নারী নির্যাতন বন্ধ তো হয়নি, বরঞ্চ ছোট ছোট মেয়েশিশুরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ঘৃণ্য অপরাধীরা অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য ধর্ষণের পর হত্যাও করছে। নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা, খেটে-খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যেই স্বপ্ন নিয়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেখানে আমরা বার বার হোঁচট খাচ্ছি। দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের একের পর এক ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে ! ঘুরে-ফিরে একই প্রশ্ন বার বার নির্যাতন ও সহিংসতা কেন কমছে না, কোথায় আমাদের গলদ ? বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচিত্র অভিনেত্রী পরীমনিকে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে! কেন ? নারী বলেই কি পরীমনির প্রতি এই অমানবিকতা, অবিচার?

নেতৃবৃন্দ, পরীমনিসহ সকল নারীর জন্য ন্যায় বিচার দাবি করেন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। সেই সাথে প্রশাসনকে নারী নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসা এবং দায়িত্ব পালনে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য ১৯৯৫ সালের ২৪ শে আগস্ট দিনাজপুর শহরের রামনগর মহল্লার এক সহজ-সরল কিশোরী ইয়াসমিন কর্মস্থল ঢাকা থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলো মায়ের সাথে দেখা করতে। পুলিশ নামের নরপিশাচরা তাকে ধর্ষণ করে লাশ ফেলে দেয় দিনাজপুর শহরের ৫ কিলোমিটার দুরে ব্র্যাক অফিসের পাশে রান্তায়। ২৬ আগষ্ট রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা কোতয়ালী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করা কালে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা কোতয়ালী থানার সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে। ২৭ আগষ্ট বিক্ষুব্ধ জনতা প্রশাসনিক কর্মকর্তার বদলিসহ দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবীতে বিশাল মিছিল বের করলে পুলিশ সেই মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় ৭ জন নিহত ও আহত হয় ৩ শতাধিক, জারি হয় ১৪৪ ধারা, মোতায়ন করা হয় বিডিআর। সামু, কাদের ও সিরাজের লাশ পাওয়া যায় কিন্তু বাকি ৪টি লাশ পুলিশ গুম করে ফেলে। জনগণের রোষ আরো বেড়ে যায় এতে, তারা শহরের ৪টি পুলিশ ফাঁড়ি জ্বালিয়ে দেয়। বিক্ষোভের দাবানল জ্বলে ওঠে দিনাজপুরের ১৩ থানাসহ সারা দেশব্যাপী। দিনাজপুর থেকে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। চাঞ্চল্যকর ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় আট বছর পর, ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সেই থেকে প্রতিবছর ২৪ আগষ্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।

বার্তা প্রেরক
হাছিনা আক্তার, সমন্বয়ক (এইচ আর এন্ড এডমিন), কর্মজীবী নারী

প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর এবং সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জাহানারা বেগমের প্রয়াণে কর্মজীবী নারী’র শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বিবৃতি:

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
তারিখ: ২৫ জুলাই, ২০২১

প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর এবং সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জাহানারা বেগমের প্রয়াণে কর্মজীবী নারী’র শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বিবৃতি:

কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, সাধারণ সম্পাদিকা শারমিন কবীর এবং ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে বলেন, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর ও বিশিষ্ট রাজীনিতিবিদ জাহানারা বেগম দেশের কৃতী সন্তান ছিলেন। তাঁদের প্রয়ানে জাতি দ্জুন গুণী মানুষকে হারাল। জাহানারা বেগম তাঁর রাজনীতির মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং নারীর মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। একইভাবে ফকির আলমগীর গণমানুষের শিল্পী ছিলেন। তিনি তার সঙ্গীত দিয়ে মানুষকে মুক্তির সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই দুজন গুণী মানুষের শূণ্যতা পূরণ হবার নয়। জাতি তাঁদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, তাঁরা দুজনই কর্মজীবী নারী’র ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। নেতৃবৃন্দ তাঁদের মৃত্যুতে শোক-সন্তপ্ত পরিবার-স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বার্তা প্রেরক
দেওয়ান আব্দুস সাফি
সমন্বয়ক, কর্মজীবী নারী।
০১৭১৪ ৫৩৪৩৪৩

নারায়াণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকান্ডে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় কর্মজীবী নারী’র তীব্র নিন্দা ও শোক প্রকাশ এবং কারখানা মালিকের বিচারসহ দাবি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১০/০৭/২০২১

গত ০৮ জুলাই, ২০২১ বৃহষ্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজে লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত ও আরো প্রায় ৩০ জনের মতো শ্রমিক আহতের ঘটনা ঘটে। হতাহত শ্রমিকদের বেশীরভাগই নারী ও শিশু/কিশোর। ভয়াবহ এ ঘটনায় শ্রমিক হতাহতের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কর্মজীবী নারী। একই সঙ্গে হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন কবীর, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখা, অগ্নিকান্ডের সময় দরজা বন্ধ রেখে ও উদ্ধারকারীদের প্রবেশে বাধা দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ এই শ্রমিকদের হত্যা করেছে। এমনকি কারখানাটিতে শ্রম আইন ভঙ্গ করে শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর তথ্যও মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টস, টেম্পাকোসহ একের পর এক কারখানা দূর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ঘটনারই সুষ্ঠ বিচার হয়নি। কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণেই দেশের শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বলে তারা মনে করেন।

কর্মজীবী নারী’র নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন ভঙ্গ করে শিশু শ্রমিক নিয়োগ, কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব, দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণে অবহেলা, অপ্রতুল নিরাপত্তা ও বহির্গমন ব্যবস্থা বজায় রেখে শ্রমিকদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়াকে মালিকের অপরাধ বলে মনে করেন। তারা বলেন, শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা প্রদান ও শ্রম আইন বাস্তাবায়নের দায়িত্ব শ্রম মন্ত্রণালয়ের। একই সঙ্গে কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখা হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। কিন্তু ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ড ও শ্রমিক হত্যার ঘটনায় প্রতীয়মান হয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হয়েছেন। সরকার এই হতাহতের দায় এড়াতে পারে না এবং তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে বলে দাবি করেছে কর্মজীবী নারী। একই সঙ্গে পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় নিহত শ্রমিকদের সনাক্তকরণ ও প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিতকরণ, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত শ্রমিকদের তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং শিশু শ্রম বন্ধসহ এ ধরণের ঘটনা বন্ধে ও শ্রমিকদের জন্য সুষ্ঠু ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের মালিকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নেতৃবৃন্দ।

বার্তা প্রেরক
ইসরাত জাহান পপি

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অবরুদ্ধ রেখে লাঞ্জিত ও মিথ্যা মামলা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১৮/০৫/২০২১

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অবরুদ্ধ রেখে লাঞ্জিত করা ও মিথ্যা মামলা দায়ের করায় কর্মজীবী নারীর তীব্র নিন্দা এবং তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি | PDF

গত ১৭ মে, ২০২১ সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয়ে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অবরুদ্ধ রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়ার কথা বলে শাহবাগ থানায় প্রেরণ এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ ও আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেছেন। এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন কবীর, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এ ধরণের ঘটনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য এবং শ্রমিক ও জনগণের অধিকার ক্ষুন্ন করছে।
নেতৃবৃন্দ আরো আশঙ্কা করেন যে, স্বাস্থ্য খাতের দূর্নীতি আড়াল করতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে এ ধরণের পরিস্থিতির শীকার হতে হয়েছে। যা জনগণের স্বার্থ পরিপন্থী। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এক জন সাংবাদিক তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই হয়রানির শিকার হওয়ায় শ্রমিক হিসেবে তার অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। নেতৃবৃন্দ মনে করেন, সুশাসন, জবাবদিহিতা ও জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় স্বাধীন এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা আবশ্যক। যে কোনো তথ্য জানার অধিকার রয়েছে জনগণের। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে চলেছেন দেশের সাংবাদিকরা। কিন্তু রোজিনা ইসলামের সাথে ঘটা এ ঘটনা যেমন অগ্রহণযোগ্য তেমনি অনুসন্ধানী ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ওপর বড় আঘাত।
এ পরিস্থিতিতে কর্মজীবী নারী’র নেতৃবৃন্দ রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত সকল মিথ্যা মামলা অপসারণ, রিমান্ডের আবেদন নাকচ ও দ্রুত জামিনের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন। একইসাথে স্বাস্থ্য খাতের দূর্নীতি রোধে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

বার্তা প্রেরক

ঈদের ছুটি নিয়ে শ্রমিকের ওপর চালানো গুলি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ কর্মজীবী নারী’র

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ১৬/০৫/২০২১
ঈদের ছুটি নিয়ে শ্রমিকের ওপর চালানো গুলি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ কর্মজীবী নারী’র | PDF

গত ১০ মে, ২০২১ তারিখে গাজীপুরের টঙ্গীতে হামীম গ্রুপের একটি কারখানায় ঈদে ১০ দিনের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের ওপর গুলি ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে ১৫ জন শ্রমিক আহত হন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কর্মজীবী নারী’র সভাপতি ড. প্রতীমা পাল মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন কবীর, সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলসহ নেত্রীবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, করোনা অতিমারীতে সারাদেশ যখন লকডাউনে স্থবির, তখনও গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখায় নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের পোশাকশ্রমিকরা। অন্যদিকে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ঈদুল-ফিতরের দুই মাস আগে থেকে সাপ্তাহিক ছুটি বন্ধ করে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা অতিমারী ঠেকাতে সরকারের ঘোষিত তিনদিনের ছুটি নিয়ে শ্রমিকদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই শ্রমিকদের ওপর তা চাপিয়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে দুই মাস আগে থেকে সাপ্তাহিক ছুটি বন্ধ করে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়ার পরেও ছুটি দিতে না পারার কারণে তাদের দিয়ে করানো অতিরিক্ত কাজের মজুরি দেবার বিষয়েও সরকার বা মালিক পক্ষের কাছে থেকে কোন দিকনির্দেশনা না থাকায় আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। উপরন্তু মালিক-শ্রমিকের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা না করে শ্রমিকদের ওপর গুলি ও লাঠিচার্জ করা হয়। নেতৃবৃন্দ মনে করেন, মালিক ও সরকার পক্ষের এহেন আচরণ অন্যায্য, শ্রমিকের সাথে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে সুষ্ঠুভাবে ঈদের ছুটির বিষয়টি সমাধান করা যেত।

উক্ত পরিস্থিতিতে কর্মজীবী নারী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে শ্রমিকদের পাওনা বেতন-বোনাস পরিশোধ করার এবং শ্রমিকের ওপর চালানো গুলি ও লাঠিচার্জের বিচার দাবি করছে। পাশাপাশি আহত সকল শ্রমিকের প্রতি সমবেদনা ও সংহতি জ্ঞাপন করছে।

বার্তা প্রেরক
হাসিনা আক্তার
সমন্বয়ক, কর্মজীবী নারী

PDF File

Pin It on Pinterest