ডেস্ক রিপোর্টঃ আজ ২৭ নভেম্বর ২০১৯ কর্মজীবী নারী ’নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ এর সাথে ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস) এর সহযোগিতায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সকাল ১০:০০ টায় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ : নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠায় সিদ্ধান্তগ্রহণসহ ট্রেড ইউনিয়নের সর্বস্তরের নারীর অংশগ্রহণে অগ্রসরতা’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। নারীশ্রমিক কণ্ঠে’র আহ্বায়ক শিরীন আখতার এমপি’র সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেনন: মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী, এমপি, ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস) এর রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ টিনা ব্লুম এবং আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর আইনুন নাহার এবং ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর তানিয়া হক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাসুদ এম রশিদ চৌধুরী এমপি বলেন, নারীরা উন্নয়নের অংশীদার। নারী-পুরুষের উন্নয়নে একটি সমাজ ও দেশ এগিয়ে যায়। তাই নারীর উন্নয়নে নারীর প্রতি যে প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলি দূর করতে হবে। নারীশ্রমিকের ন্যায্য মজুরি,
মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে হবে। টিনা ব্লম বলেন, সারা বিশে^ নারীর একই সমস্যা চলছে তাই সবাই একসাথে কাজ করছি।
‘নারীশ্রমিক কন্ঠ’ আমাদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। আশা করি, এই মঞ্চ নারীশ্রমিকদের অগ্রসরে কাজ করে যাবে।
প্রফেসর আইনুন নাহার বলেন, নারীকে তার দাবি পূরণে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে বের হয়ে এসে নারীর শ্রেণিগত অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে হবে এবং নারীকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হতে হবে । প্রফেসর তানিয়া হক বলেন,
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি গবেষণা বলছে, পরিবারের দায়িত্ব এবং সন্তানের দেখাশুনার জন্য ১০.৬৮% নারী চাকরি ছেড়ে ঘরে ফিরে গিয়েছে। তিনি মনে করেন, শ্রমিকের পরিচয় লিঙ্গের মাধ্যমে নয় কাজের মাধ্যমে সুতরাং নারীর প্রতি মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে শিরীন আখতার এমপি বলেন, নারীশ্রমিক কন্ঠ নারীর বাধাগুলিকে চিহ্নিত করে নারীশ্রমিকের নেতৃত্বকে বিকশিত করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি মঞ্চ। একজন নারীর মনের কথা বলার জায়গা নেই যেটা পুরুষের আছে। তাই নারীরও একটা আড্ডার জায়গা থাকতে হবে যেখানে নারীরা তার হাসি, আনন্দ, দুঃখ বিনিময় করবে। একইসাথে নারীর প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে এবং হাইকোর্টের নীতিমালাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সেমিনারে সঞ্চালনা করেন নারীশ্রমিক কণ্ঠে’র সদস্য হামিদা খাতুন, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন লিমা ফেরদৌস এবং ধারণাপত্র পাঠ করেন উম্মে হাসান ঝলমল। আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, নারীশ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সংগঠন, বিভিন্ন সেক্টরের নারীশ্রমিকগণ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০: নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠায় সিদ্ধান্তগ্রহণসহ ট্রেড ইউনিয়নের সর্বস্তরের নারীর অংশগ্রহণে অগ্রসরতা’
শীর্ষক সেমিনার থেকে নারীশ্রমিক কন্ঠে’র সুপারিশ:
নারীশ্রমিকের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি ও শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা; অর্থনৈতিক ন্যায্যতা গড়ে তোলা; প্রাতিষ্ঠানিকঅপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমশক্তির মধ্যে নারী-পুরুষ সকলের ক্ষেত্রে সুযোগের সমতা তৈরি করা; নারীর জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে
মাতৃত্বকালীন সময়ে সহযোগিতা ; ট্রেড ইউনিয়নে নারীশ্রমিকের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও নারী-পুরুষ শ্রমিকের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের নারীশ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার সুরক্ষায় আইনি পদক্ষেপ পরিচালনা করা; সকল স্তরের নারীশ্রমিকের অর্জনসমূহ দেশজ-আন্তর্জাতিক পরিম-লে তুলে ধরা।
‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’ একটি কার্যকর শ্রমজীবী নারীদের মঞ্চ যা সকল নারীর অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। নারীশ্রমিকের প্রতি সহিংসতার, সমাজের সকল নিগৃহের ও বঞ্চনার প্রতিবাদ করবে। ‘কর্মজীবী নারী’ এই মঞ্চের সচিবালয় হিসেবে কাজ করছে ২০১৬ সাল থেকে।